Amazing and Interesting facts about the country Romania In Bangla - রোমানিয়া সম্পর্কে অসাধারণ কিছু মজাদার তথ্য জেনে নিন
আজ আমরা ইউরোপের এমন একটি দেশ সম্পর্কে জানবো যেখানে কালা জাদুকে সেই দেশের সরকার বৈধ করে দিয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সৌন্ধর্যে ভরা দেশটির নাম হলো রোমানিয়া। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক রোমানিয়া সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য।
রোমানিয়া নামটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ রোমানাস থেকে , যার অর্থ রোমান সাম্রাজ্যের নাগরিক। রোমানিয়া দেশটি ১৮৭৭ সালে অটোমান স্বাসন থেকে মুক্তি পেয়ে ১৮৮১ সালে কিংডম অফ রোমানিয়া নাম প্রতিষ্টিত হয়। এই দেশের রাজধানী হলো বুখারেস্ট এবং এটিই হলো রোমানিয়ার সবচেয়ে বড়ো শহর। এই বুখারেস্টেই অবস্থিত রোমানিয়ার পার্লামেন্ট প্যালেস টি। অনেকে এই বিল্ডিংটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভারী বিল্ডিংও মনে করেন। প্রায় ২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩৯৭ বর্গ কিলোমিটার এই দেশটির আয়তন। এটি দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো দেশ এবং পুরো ইউরোপে রোমানিয়া ১২ তম অবস্থানে রয়েছে।
২০১৭ সাল পর্যন্ত রোমানিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৯৯ লক্ষ। সেখানকার বেশিরভাগ মানুষই খ্রীষ্টান সম্প্রদায় ভুক্ত। রোমানিয়া দেশের মানুষ দের রোমানিয়ান বলা হয়। এছাড়াও হাঙ্গেরিয়ান, রোমা জার্মান ইত্যাদি জাতি গোষ্ঠীর মানুষ সেখানে বসবাস করে। রোমানিয়ার আধিকারিক ভাষা হলো রোমানিয়ান। সেই দেশের মানুষ রোমানিয়ান ভাষাতেই কথা বলে। এই ভাষাটি প্রায় ১৭০০ সাল পুরোনো একটি ভাষা। সেই দেশের অধিকাংশ মানুষ পশ্চিম দেশ গুলির মতো জীবন যাপন করে। কিন্তু গ্রাম এলাকার মানুষ তাদের ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। রোমানিয়াতে মহিলাদের চুল দেখে অনায়াসে বোঝা যায় যে সে বিবাহিত না অবিবাহিত। কারণ অবিবাহিত মেয়েরা সাধারণত চুলে বিনুনি করে থাকে এবং বিবাহিত মহিলারা মারমা নামক কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রাখে।
রোমানিয়ার জাতীয় পতাকায় তিনটে রং দেখতে পাওয়া যায়। এই তিনটি রং ট্রানসিলভানিয়া, মলডেভিয়া এবং ওললাচিয়া স্থান গুলিকে নির্দেশ করে। এই স্থান গুলি রোমানিয়ার ঐতিহ্য প্রদান করে। এই দেশটির চার দিকে রয়েছে বুলগেরিয়া, সার্ভিয়া, হাঙ্গেরি ইউক্রেন ইত্যাদি। এছাড়াও দেশটির দক্ষিণ পূর্ব ভাগে অবস্থিত কৃষ্ণ সাগর। পুরো ইউরোপের বেশিরভাগ জঙ্গলই এই রোমানিয়াতে দেখতে পাওয়া যায়। নানান প্রকার বন জঙ্গল থাকায় সেখানে প্রচুর পরিমানে পশুপাখি দেখা যায়। সাধারণত রোমানিয়া ব্রাউন বিয়ার এর। রাশিয়া ছাড়া ইউরোপের বেশিরভাগ ব্রাউন বিয়ারই রোমানিয়াতে পাওয়া যায়। রোমানিয়াতে প্রতিবছর অনেক বিদেশী পর্যটক ঘুরতে যায়। ফলে সেখানকার দর্শনীয় স্থান গুলি অনেক জনপ্রিয় উঠেছে। সেই জন্য রোমানিয়ার অর্থনীতিতে পর্যটক শিল্পের ভূমিকা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিভিন্ন ফলমূল, তেল,খনিজ সম্পদ, কেমিক্যাল, লোহার যন্ত্রপাতি, বস্ত্র শিল্প ইত্যাদি রোমানিয়ার অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রোমানিয়া দেশের বড়ো পর্বত শ্রেণীর নাম হলো মোল্ডেভেনু পাহাড়। এর উচ্চতা প্রায় ২৫৪৪ মিটার।
রোমানিয়ার জাতীয় মুদ্রা রোমানিয়ান লেয়ু। যার অর্থ লায়ন। এই দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান বেশ নিম্ন মানের। এর কারণ হলো রোমানিয়া অর্থনীতিতে ইউরোপের অন্যান্য দেশ গুলির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু সেখানকার মানুষ যথেষ্ট পরিশ্রমী হওয়ায় দিন দিন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রোমানিয়া দেশটি।
রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে একটি জনপ্রিয় বইয়ের দোকান রয়েছে। সেই বইয়ের দোকানটিতে আনুমানিক প্রায় ১২ হাজার বই, ৬ হাজার অ্যালবাম রয়েছে।
ইউরোপের অন্য দেশ গুলির মতো রোমানিয়ারও প্রিয় খেলা ফুটবল। সেখানকার মানুষ খুবই ফুটবল প্রেমী থাকে। তবে ওরা শুধু ফুটবলে সীমাবদ্ধ না, ফুটবলের পাশাপাশি ওরা টেনিসেও বিশ্বসেরা।
পৃথিবীর দীর্ঘতম লবণের ক্ষনির মুসিয়ামটি রোমানিয়ার ট্রানসেলভেনিয়াতে অবস্থিত। অদ্ভুত ভাবে এটি শুধুমাত্র মেশিন এবং হাত দিয়ে খোদায় হয়েছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে পুরানো গ্লেসিয়ার এই রোমানিয়াতেই দেখতে পাওয়া যায়।
রোমানিয়াতে কালা জাদুকে বৈধ করে দিয়েছে সেই দেশের সরকার তাই যারা এই কালা জাদু দিয়ে পয়সা উপার্জন করে তার উপরে আলাদা করে ট্যাক্স বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সবশেষে, রোমানিয়ার মানুষ তাদের অতিথি আপ্যায়নের জন্যও পৃথিবী বিখ্যাত। বিদেশী পর্যটকরা যারা এই দেশে বেড়াতে আসেন তারা যদি এখানকার স্থানীয় ভাষায় কথা বলেন তো তারা খুবই আনন্দিত হয়। ওরা অতিথিদের বিভিন্ন রকমের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। এবং সেখানকার মানুষরা নরম মনের হয়ে থাকে।
ধন্যবাদ
0 Comments