ভ্যাটিকান সিটি সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য জেনে নিন | Amazing and Interesting Facts about Vatican City in Bengali

Amazing and Interesting Facts about Vatican City - ভ্যাটিকান সিটি সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য জেনে নিন 



আজ আমরা ইউরোপের এমন একটি দেশ সম্পর্কে জানবো যেই দেশটির আয়তন মাত্র ০.৪৪ বর্গকিমি বা ১১০ একর। এই কম আয়তনের জন্য এটা পৃথিবীর সবথেকে ক্ষুদ্রতম দেশ। ইতালির শহর রোমের মধ্যেই এর অবস্থান যার নাম ভ্যাটিকান সিটি। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ভ্যাটিকান সিটি সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য (Amazing and Interesting Facts about Vatican City) 

ইতালির রাজধানী রোমের মধ্যে অবস্থিত ভ্যাটিকান সিটি দেশটিকে আধিকারিক ভাবে ভ্যাটিকান সিটি রাষ্ট্র অথবা স্টেট অফ ভ্যাটিকান সিটি বলা হয়। ভ্যাটিকান সিটির স্বাসন ব্যবস্থার প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হন পোপ। ইনি রোমান ক্যাথলিক গির্জারও প্রধান। ১৯২৯ সালে ল্যাটেরান ট্রিটির মাধ্যমে এই দেশ স্থাপিত হয়ে ছিল। ল্যাটেরান ট্রিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল কিংডম অফ ইতালি এবং হোলি সি- এর মধ্যে।

ভ্যাটিকান সিটির মোট জনসংখ্যা ১০০০ জন। শুধুমাত্র জন্ম নিলেই ভ্যাটিকান সিটির নাগতিকত্ব পাওয়া যায় না। নাগরিকত্ব পেতে গেলে সেখানকার লোকদের কাজের সাথে যুক্ত থাকতে হয়। সেই দেশে সাধারণত ল্যাটিন এবং ইতালিয়ান ভাষায় বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে সরকারি ভাবে কোনো ভাষা সেখানে নেই। এই দেশের মুদ্রা ইউরো।
.
ভ্যাটিকান সিটির নিজস্ব পোস্ট অফিস রয়েছে। সেখানে তাদের নিজস্ব পোস্টাল সার্ভিস এবং নিজস্ব পোস্টাল স্ট্যাম্প রয়েছে। ভ্যাটিকান সিটির নিজস্ব ডাক পরিষেবার পাশাপাশি নিজস্ব টেলিফোন পরিষেবা এবং নিজস্ব ইন্টারনেট পরিষেবাও রয়েছে।

মাত্র ১.০৫ কিমি দৈর্ঘ্য এবং ০.৮৫ কিমি প্রস্থ বিশিষ্ট এই দেশটিতে কোনো হাইওয়ে কিংবা এয়ারপোর্ট নেই। হেঁটে চলাফেরা করাটাই উত্তম। দেশের পশ্চিম প্রান্তে ভ্যাটিকান সিটি হেলিপোর্ট রয়েছে। যা কিছু বিশেষ কাজে ব্যবহার করা হয়। এই দেশের সবচেয়ে কাছে এয়ারপোর্ট  লিওনার্দো দা ভিন্সি ফিউমিচিনো রয়েছে যা ইতালির রাজধানী রোম শহরে অবস্থিত। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রেলপথ রয়েছে ভ্যাটিকান সিটিতে। সেগুলি সাধারণত জিনিসপত্র নিয়ে আসার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে প্রত্যেক শনিবার পর্যটকরা এই রেলগুলি দিয়ে ভ্রমণ করতে পারে। ভ্যাটিকান সিটির গাড়ি গুলির নিজস্ব লাইসেন্স প্লেট রয়েছে। এসসিভি- স্টেটাস সিভিটাটিস ভাটিক্যানি।

পুরো দেশের মধ্যে একটি মাত্র ঔষধালয় রয়েছে। ১৮৭৪ সালে স্থাপিত এই ভ্যাটিকান ফার্মেসি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যস্ততম একটি ফার্মেসি। যেখানে প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। ইতালিতে কোনো ঔষধ না পাওয়া গেলে সেখানকার মানুষ এই ফার্মাসিতে চলে আসে।

পৃথিবীতে মাত্র দুটি দেশে সর্বমত স্বীকৃত বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য নিদিষ্ট কোনো আইন নেই। একটি হলো ফিলিপাইন এবং অপরটি হলো ভ্যাটিকান সিটি। ভ্যাটিকান সিটি স্বাধীন রাষ্ট্র হলেও ইউনাইটেড ন্যাশনের সদস্য না। তাদের শুধুমাত্র অবজার্ভার স্টেটাস আছে। 

স্বাধীন রাষ্ট্র ভ্যাটিকান সিটির নিজেদের কোনো  সামরিক সুরক্ষা বেবস্থা নেই। ইতালির আর্মিরাই সব দেখাশোনা করে। গার্ডরাই দেশের পোপ এবং নাগরিকদের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকে। 

ভ্যাটিকান সিটি নামকরা ধর্মীয় স্থান হলেও পর্যটকদের কাছে ভ্যাটিকান সিটি খুবই জনপ্রিয়। সেখানে অনেক জনপ্রিয় জায়গা রয়েছে যেমন সেইন্ট পিটার স্কয়ার, রাফেল রুমস, সিস্টিন চ্যাপেল, ভ্যাটিকান মিউজিয়াম ইত্যাদি।  শুধু মাত্র সেখানকার মিউজিয়াম গুলি দেখতেই বহু পর্যটক সেখানে বেড়াতে যায়। তাই বলা যায় ভ্যাটিকান সিটির অর্থনীতির অনেকটায় আসে এই পর্যটক শিল্প থেকে। পর্যটক শিল্পের পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন মুদ্রা, প্রকাশনা ইত্যাদি থেকেও অনেক অর্থ উপার্জন করা হয়।
সবশেষে, ভ্যাটিকান সিটি সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ হলেও সেখানকার মানুষরা খুবই ফুটবল প্রেমী হয়। তাদের নিজস্ব ন্যাশনাল ফুটবল টীম রয়েছে। প্রত্যেক বছর সেখানে ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ হয়।

এই ছিল ক্ষুদ্রতম দেশ ভ্যাটিকান সিটি সম্পর্কে কিছু তথ্য। প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Post a Comment

0 Comments