Bengali Facts Uruguay | কিছু অদ্ভুত এবং মজার তথ্য উরুগুয়ে সম্পর্কে
আজ দক্ষিণ আমেরিকার আরেকটি ফুটবলের দেশ সম্পর্কে কিছু মজার জিনিস জানবো। যার নাম উরুগুয়ে।
উরুগুয়ে দেশটি দক্ষিণ আমেরিকার ছোট একটি দেশ। আয়তনে দেশটি দক্ষিণ আমেরিকায় সুরিনামার পর দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি দেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুরের কারণে উরুগুয়েকে দক্ষিণ আমেরিকার সুইজারল্যান্ড বলা হয়। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ পূর্ব উপকূলে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্যে অবস্থিত একটি দেশ। আধিকারিক ভাবে উরুগুয়ে দেশটিকে পূর্ব উরুগুয়ে প্রজাতন্ত বলা হয়। এই দেশের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর মন্টেবিডিও। এই দেশের বেশির ভাগ মানুষ শহরে বসবাস করে। প্রায় ৪০% মানুষ শুধুমাত্র এই দেশের রাজধানী মন্টেবিডিওতে বসবাস করে। উরুগুয়ে ব্রাজিল থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এই দেশের বেশির ভাগ লোকজন ইউরোপীয় বংশোদ্ভুত। উরুগুয়ের রাষ্ট্রীয় ভাষা স্পেনিশ। এই দেশের সংস্কৃতিতে স্পেনের ঐতিহ্যের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
উরুগুয়ের জাতীয় সংগীত পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ জাতীয় সংগীত। এটা প্রায় ৬ মিনিটের বেশি সময় ধরে গাইতে হয়।
পৃথিবীর একমাত্র দেশ যার জাতীয় খাবার হলো স্যান্ডউইচ।
শিক্ষার দিক দিয়েও উরুগুয়ে অনেক এগিয়ে। বিশ্বের শীর্ষ শিক্ষিত দেশ গুলির মধ্যে উরুগুয়ে একটি। এই দেশটিতে প্রত্যেকের শিক্ষা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। ২০০৯ সালে প্রথম উরুগুয়ের সব ছাত্রছাত্রীর জন্য বিনামূল্যে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের বেবস্থা করে দেওয়া হয়। এই দেশে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষা প্রধান করা হয়।
২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শ্বাসন করা উরুগুয়ে প্রেসিডেন্ট জোসে মুজিকাকে পৃথিবীর সবচেয়ে গরিব প্রেসিডেন্ট বলা হয়। কারণ উনার সব টাকা বিভিন্ন সংস্থাতে দান করে দিতেন। উনি প্রেসিডেন্ট ভবন ছেড়ে অন্য কোনো ছোট ঘরে থাকতেন। ১৯৮৫ পূর্বে উরুগুয়েকে মিলিটারিরা শ্বাসন করতো। কিন্তু এর পরে সেখানে লোকতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হয়।
অর্থনীতিতে উরুগুয়ে খুবই উন্নতশীল একটি দেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এই দেশে অনেক পর্যটকরা আসে। এই পর্যটন শিল্প দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কৃষিকাজ ও গবাদি পশুপালনও এই দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যার কারণে উরুগুয়েতে প্রচুর পরিমানে গরু এবং ভেড়া দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া পেট্রোলিয়াম , যানবাহনের যন্ত্রাংশ এবং খাদ্য প্রকিয়াকরণ এর উপর নির্ভরশীল। উরুগুয়ে মাংস, ভেড়ার পশম এবং চামড়া, আঙ্গুর , তেল ও মদ রপ্তানি করে থাকে। দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় উরুগুয়েতে। এই দেশের ৯৫% বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত।
উরুগুয়ে দেশটি সাধারণত বিশ্বের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে ফুটবলের জন্য। ফুটবলের সাথে উরুগুয়ের সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই। এবং ফুটবল ইতিহাসে অনেক সাফল্য পেয়েছে এই দেশটি। প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব এই দেশটির আছে। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে প্রথম বিশ্বকাপ জয় করে উরুগুয়ে। ওরা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয় করে ১৯৫০ সালে ব্রাজিলকে হারিয়ে। যেই দেশ যতটা বিশ্বকাপ যেতে তাদের দেশের জার্সিতে ঠিক ততটা ষ্টার লাগানো থাকে। সেই হিসাবে উরুগুয়ের জার্সিতে ২ তা ষ্টার থাকার কথা। কিন্তু ওদের জার্সিতে ৪ টা ষ্টার দেখতে পাওয়া যাই। তার কারণ হচ্ছে ওরা বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে ১৯২৪ সালে এবং ১৯২৮ সালে মোট ২ বার গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ফুটবলে স্বর্ণপদক জয় করে। এছাড়াও ওরা সর্বমোট ১৪ বার মহাদেশীয় কাপ ( কোপা আমেরিকা) জয় করে। আন্তর্জাতিক ভাবে উরুগুয়ে মোট ১৮ টি শিরোপা জয় করে।
0 Comments