Amazing and Interesting facts about Saudi Arabia | পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ সৌদি আরব সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য জেনে নিন

পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ সৌদি আরব সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য জেনে নিন Amazing and Interesting facts about Saudi Arabia




সৌদি আরব বিশ্বের এমন একটি দেশ যেখানে মানুষের বসবাস এবং সেই দেশের মানুষের চালচলন অন্য দেশগুলির থেকে অনেকটাই আলাদা। আরব উপদ্বীপের দেশ গুলির মধ্যে সবচেয়ে বড়ো দেশ হলো সৌদি আরব। আধিকারিক ভাবে এই দেশটিকে কিংডম অফ সৌদি আরব বলা হয়। তো জেনে নেওয়া যাক সৌদি আরব সম্পর্কে কিছু অদ্ভুত এবং মজাদার তথ্য। 

সৌদি নামটি আরবি ভাষা সু ইউ দিয়াহ থেকে এসেছে। এটি সৌদির স্বাসক পরিবার আল সাউদ থেকে নেওয়া হয়েছে। স্বাসক আব্দুল আজিজ ইবন সাউদ ছিল সৌদি আরবের প্রথম স্বাসক। সেই দেশের বর্তমান স্বাসক সালমান আল সাউদ একজন প্রভাব শালী বেক্তি। সৌদি আরব একটি ইসলামিক রাষ্ট্র। তাই সেই দেশের স্বাসক বংশ পরম্পরাই ইসলাম ধর্মের নীতি অনুযায়ী স্বাশন বেবস্থা পরিচালনা করেন। সৌদি আরব পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি খনিজ তেল রপ্তানি করার দেশ গুলির মধ্যে একটি। সেখানে সবচেয়ে বেশি খনিজ তেলের ভান্ডার আছে। প্রায় ৩  কোটি ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার এই দেশটি অর্থনীতিতে পৃথিবীর অন্যান্য শক্তিশালী দেশ গুলির মধ্যে একটি। 

সৌদি আরবকে দ্য ল্যান্ড অফ দ্য টু হোলি মস্কোইসও বলা হয় কারণ ইসলাম ধর্মের দুই পবিত্র স্থান সেখানে অবস্থিত। আল মসজিদ আল হারাম  যা মক্কাতে এবং আল মসজিদ আল নাওয়াবী যা মদিনাতে অবস্থিত। ইসলাম ধর্মের মানুষ হজ যাত্রাতে মক্কা তে আসেন। এই মক্কা শহরেই ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মহম্মদের জন্ম স্থান। 

সৌদি আরবের রাজধানী এবং সবচেয়ে জনবহুল শহরটি হলো রিয়াদ।  এছাড়াও আরো অনেক শহর রয়েছে যেমন জিদাহ, দামাম ইত্যাদি। সেই দেশে অধিকাংশ মানুষ মুসলিম। তাই সৌদি আরবের উপর দিয়ে কোনো  মাদক দ্রব্য প্রাচার হয় না। 

সৌদি আরবের আইন বেবস্থা পৃথিবীর কঠোরতম আইন ব্যবস্থার দেশ গুলির মধ্যে একটি। সেই জন্যে সৌদি আরবে অপরাধের সংখ্যা খুবই নগন্য। সৌদি আরবের কোনো সংবিধান নেই। তাদের কাছে কোরানই  সব। সৌদি আরবের আইন ব্যবস্থার প্রাথমিক উৎস হলো ইসলামিক শরিয়া। যা কোরান এবং সুন্নাহর শিক্ষা গুলির থেকে নেওয়া।  এই শরিয়া আইনটি খুবই কঠোর হয়। 

সৌদি আরবের অর্থনীতি প্রধানত তৈল খনন এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভর। সেখানে ৯০ শতাংশ ইনকাম তেল রপ্তানি থেকে আসে। এছাড়া পৃথিবীর ষষ্ট সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার রয়েছে সৌদি আরবে। সৌদি আরবের সর্বপ্রথম তেলের কুঁয়োটি হলো দামাম নম্বর ৭। সৌদি আরব বেবসা বাণিজ্যের দিক দিয়ে অন্য দেশ গুলির থেকে অনেকটাই এগিয়ে যার কারণে সৌদি আরবের ৩৫ শতাংশ মানুষই বিদেশী যারা বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য সেই দেশে বসবাস করেন। 

সামরিক শক্তিতেও সৌদি আরব অনেকটাই শক্তিশালী। আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে দেশের ১০ থেকে ১২ শতাংশ জিডিপি শুধুমাত্র সৈন্য এবং সামরিক জিনিসপত্রের পিছনে খরচ করা হয়। 

সৌদি আরবে খুব কম পরিমানে বৃষ্টিপাত হয়।  যেই কারণে সৌদি আরবে কোনো নদী দেখতে পাওয়া যায় না। সৌদি আরব পৃথিবীর একমাত্র  নদীবিহীন দেশ।  সেখানে বেশির ভাগ অংশই মরুভূমিতে ভরা। কিছু বিখ্যাত মরুভূমি যেমন আল নাফুডরুব আল খালী এই সৌদি আরবেই অবস্থিত। যেই কারণে সেখানে গরমকালে তাপমাত্রা  সর্বাধিক ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট পর্যন্ত হতে পারে। 

সৌদি আরব শিক্ষার ক্ষেত্রেও অনেক এগিয়ে রয়েছে। কারণ সেখানে শিক্ষার্থীদের হার যথেষ্ট বেশি। সেখানে পুরুষ এবং মহিলা সবার জন্যই শিক্ষা সহজলভ্য। সৌদি আরবে পুরুষদের শিক্ষার হার ৯০.০৪ শতাংশ এবং মহিলাদের শিক্ষার হার ৮১.৩০ শতাংশ।  

সৌদি আরব ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়ায় সেখানে অনেক নিয়ম করে চলতে হয়। সেখানে পাবলিক প্লেসে মদ্যপান নিষেধ। সেখানে মেয়েদের ছোট ছোট পোশাক পড়া, পর্নোগ্রাফি দেখাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আর যারা সেগুলি অমান্য করবে তাদের খুব কঠিন শাস্তি পেতে হয়। তাই সেই দেশের মানুষের জামাকাপড়ে ইসলামী ধর্মের ছাপ  স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। সেখানে পুরুষেরা থাওব নামক এবং মহিলারা আবায়া নামক পোশাক পরিধান করেন। সৌদি আরব একটি ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়ায় সেখানে শুক্রবার এবং শনিবার সবাইকে ছুটি দেওয়া হয়। কারণ মুসলিমদের জন্য শুক্রবার একটি পবিত্র দিন। 

সমস্ত আরব দেশ গুলির খাবার প্রায় একইরকম। তারা সবসময় একইরকম খাবার খেতে পছন্দ করেন। ওদের খাবারে খেজুর এবং মধু বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায়। 

সৌদি আরব অর্থনীতির পাশাপাশি খেলাধুলাতেও অনেক প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। সৌদি আরবের ন্যাশনাল ফুটবল টিম এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে সফল ফুটবল টিম। এছাড়াও সেই দেশে বাস্কেটবল, স্কুবা ডাইভিং এই সব খেলা গুলি বিখ্যাত। সেখানে কিছু ঐতিহ্যের খেলা যেমন ঘোড়া দৌড় বা উট দৌড় বিখ্যাত। সৌদি আরবে একধরণের মজার গাড়ির খেলা দেখা যায় যেখানে বড়ো বড়ো গাড়িকে এক দিকে কাত করে বাকি দুই চাকা দিয়ে চালানো হয়, একে সাইডওয়াক  স্কিং বলা হয়। 

Post a Comment

0 Comments